রামুকাকার ট্রেনযাত্রা

সন্ধের ট্রেন, যেতে হবে প্রায় দু’হাজার মাইল। অনেক বছর ট্রেনে চড়েন না বলে রামুকাকা ঠিক জানতেন না যে সবাই ট্রেনে উঠেই বিছানায় শুয়ে পড়ে। মধ্যবিত্তের মত এখানেও মিডল বার্থের প্যাসেঞ্জার একটু মিনমিন করে প্রথমে, কিন্তু ট্রেনে রাজা হল যে লোয়ার বার্থ পায়। কিরকম একটা গর্বের অনুভূতি ঠিকরে পরে তার চোখে, মুখে আর চেহারায়।

রামুকাকার কপাল মন্দ, বয়স মাত্র পঞ্চাশ; তাই নিয়মের যাঁতাকলে লোয়ার বার্থ পাওয়া যায় নি, এক্কেবারে আপার বার্থ, বৌদি অবশ্য মহিলা কোটাতে নিচে জায়গা পেয়েছেন।

যে বউ শুধুমাত্র দুপুরে একবার খাওয়ার সময়ে ফোন করে জিজ্ঞেস করে, খেয়েছো কিনা আর ঠিক পাঁচটা বাজলেই মেসেজ করে 2 কিলো আলু, 250 গ্রাম কচি শসা আর 6 পিস ডিম আনার জন্য (ভয় পাবেন না এটা একদিনের খাবার নয়), সেই বউ ট্রেনের নিচের বার্থে শুয়ে শুয়ে আপার বার্থে থাকা বরকে মেসেজ করছে –

“শোনো, একদম নাক ডাকবে না কিন্তু। একজন অলরেডি ডাকা শুরু করে দিয়েছে। কাল আর পরশু বাড়িতে কিন্তু তুমি খুব নাক ডেকেছো।”

পরের দিন। ভোর পাঁচটার অ্যালার্ম বেজেই চলেছে, এক ভদ্রলোক রেল কোম্পানির দেওয়া সাদা চাদরে আপাদমস্তক মুড়ে জোরে জোরে নাক ডেকে ঘুমের দেশে বিচরণ করছেন। তার এলার্মে বাকিরা উঠে গেলেও তিনি কিন্তু নাক ডাকা বন্ধ করেননি।

রামুকাকা কাকে যেন বলছেন শোনা গেলো – ফোন কোম্পানি এলার্মে দোয়েল, কোকিল, আর ঝর্ণার জলের শব্দ না দিয়ে একটু বাঘের হালুম হুলুমও তো দিতে পারে!

রামবাবু rocks !!!

Disclaimer: কেউ যদি আপনাকে রাস্তা – ঘাটে, বাড়িতে – অফিসে রামুকাকা বলে ডাকে, তার দায়িত্ব কিন্তু লেখকের নয় !!!!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.