আমার জুতোজোড়া

ছবিটা অনেকদিন এক কোণে পড়ে ছিল, ঠিক যেমন জুতো জোড়া নিজেও পড়ে থাকে সিঁড়ির তলায় বা গেটের বাইরে। এখন তো আবার ওদের থাকার একটা ঘরও হয়েছে। সারি সারি জুতো থাকে থাকে সাজানো। ভেতরে বালি কাদা থাকলেও বাইরে চকচকে, সব কিছু পরিষ্কার, দরজা বন্ধ। হতভাগা জুতো!

একে তো এই গরিব দেশে কেউ জুতোর পেছনে বেশি খরচ করতে চায় না। অথচ ব্রিটিশরা বারবার বলে গেছে, সারাদিন যেসব জিনিস ব্যবহার করবে সেগুলো সবসময় সবচেয়ে ভালো কোয়ালিটির কিনবে। সস্তা কিনেছ কী ঠকেছো। জুতোর ক্ষেত্রেও এক, সারাদিন যেটা পড়ে মাইলের পর মাইল হাঁটবেন বা সবসময় ওপর নীচ করবেন, সেটা ভালো না হলে ডাক্তারের পেছনে চার গুণ টাকা বেরিয়ে যাবে।

কে বোঝে এই কথা? কেউ মানলে তবে না? ছোটবেলায় জুতো কিনতাম, প্রত্যেক বছর পুজোর ঠিক আগেই ছিঁড়ে যেত। অদ্ভুত সমাপতন! এখন জুতো কিনলে রোজ পরলেও পনেরো বছর এমনি চলে যায়। কোম্পানির ব্যবসা কী করে চলছে কে জানে! একটা টিভি এসেছিল মার্কেটে অনেক বছর আগে, উঠে গেলো পাঁচ বছরে পাঁচটা টিভিও খারাপ হয়নি বলে।

কিন্তু উডল্যান্ড টিকে আছে, বছরের পর বছর ধরে। কোন জাদুবলে সেটা আজো জানি না। এটা আমার দ্বিতীয় উডল্যান্ড, বছর তিনেক আগে কেনা। তার আগেরটা পনের বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে গেছে রোদ, জল, বৃষ্টির মাঝে। এতো বছরের সঙ্গী, তাই প্রাণে ধরে আগেরটা ফেলতেও পারিনি। শুধুমাত্র একপাশে চামড়া নরম হয়ে ছিঁড়ে গেছে, তাই রেখে দিয়েছি যদি কোনোদিন পড়তে হয়!

অনেকগুলো গুরত্বপূর্ণ ট্যুর সফলভাবে কমপ্লিট করে আপাতত সংসারে নতুন ভার্সনই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.