আমার জুতোজোড়া

ছবিটা অনেকদিন এক কোণে পড়ে ছিল, ঠিক যেমন জুতো জোড়া নিজেও পড়ে থাকে সিঁড়ির তলায় বা গেটের বাইরে। এখন তো আবার ওদের থাকার একটা ঘরও হয়েছে। সারি সারি জুতো থাকে থাকে সাজানো। ভেতরে বালি কাদা থাকলেও বাইরে চকচকে, সব কিছু পরিষ্কার, দরজা বন্ধ। হতভাগা জুতো! একে তো এই গরিব দেশে কেউ জুতোর পেছনে বেশি খরচ…

গোটাপাঠানা

কর্মসূত্রে এখানে অল্প কিছুদিন থাকতে হবে, তাই বন্ধুবরের অনুরোধে তার সাজানো ফ্ল্যাটেই থাকবো মনস্থির করলাম। গৃহপ্রবেশের পুজো করে তিন দিন থেকে আর থাকেনি ওরা। দুটো ঘরে বিছানা, আলমারি আছে, রান্নাঘরে চিমনিও কাজ করে। অতএব মাস খানেকের জন্যে এটাই আমাদের ঠিকানা। ভাবছেন, ছিল মাত্র মাস খানেক, সেটার আবার এত ঘটা করে বলার দরকার কি? তাহলে শুনুন,…

অথঃ রথ কথা

ছোটো বেলাটা কেটেছে বড় রাস্তার ধারে, দিনে বাস আর রাতে লরির ছন্দে। প্রথম কেনা হয়েছিল একতলা একটা রথ, বেশ শক্ত পোক্ত কাঠের – মেটে লাল রঙের। রথের আগের দিন মার্বেল কাগজ দিয়ে তাকে সাজানো, জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাকে ওই ছোট্ট জায়গায় আগে পরে করে বসানো, দড়িটাকে আমার টানার মাপ মত করা – এগুলো করার জন্য সন্ধেবেলা…

পকেটমার

2000 সালের জানুয়ারী মাস, দুপুর 1.10, শ্যামবাজারের Manidra Chandra কলেজ বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি। বাড়ি ফিরব 3 No বাসে করে। ফাঁকা বাসের শেষ পাদানিতে পা দিতেই প্যান্টের পকেটে কেউ হাত দিলো, চকিতে ঘুরতেই বাস থেকে নেমে গেলো সে। শ্যামবাজার অব্দি বাস আস্তেই যায়, তাই নামতে কোনো অসুবিধা হয়নি তার। লম্বা কানঢাকা চুল, মাঝখানে সিঁথি, মাঝারি…

রবীন্দ্রনাথ আর কখনও ফিরে আসেন নি

যখন পড়াশোনাতে বেশিদূর এগোতে পারলাম না, তখন একদিন কুঠিঘাটে গঙ্গার ধারে বসে ভাবছিলাম – কেন এমন হলো? এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না! পড়াশোনাকে আমি যথেষ্ট ভালোবাসি আর সেটার কতটা দরকার সেটাও ভালো মতন জানি। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে, আমি কোনোদিন পড়াশোনাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে পারিনি। হয়তো আমার বাবা এটার জন্য দায়ী, কোনোদিন আমায়…

বাড়ির সরস্বতী পুজো

বুকে হাত দিয়ে আজ বলতে পারি, জীবনের প্রথম দিকে অন্তত বছর দশেক অঞ্জলির পুরো মন্ত্রটা উচ্চারণ করতে পারিনি। কোনোরকমে সামলে দিয়েছি। একটু বড় হয়ে মানে বুঝে বলতে শিখেছিলাম বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমস্ত‌ুতে আর ওই বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-স্থানেভ্য এব চ। মূর্তি পুজোর চল ছিল না বলে একটা সুন্দর ফটো কেনা হয়েছিল, আজও ঠাকুরের আসনে সেই ফটোই রাখা…