জীবন সুনামি

বলি সকাল থেকে চা চা করে চেঁচিয়ে যাচ্ছ, তা বাপু একটু নিজেও তো করে নিতে পারো! দেখছ না আমি সবে স্নান করে একটু গোপাল পুজোয় বসেছি। একটা রবিবার, আমার গোবিন্দকে জল মিষ্টি না দিয়ে কি তোমায় গেলাতে পারি? এইটুকুও কি বোঝ না? বাড়িতে থাকলে রোজ এক কথা সকালে উঠে – আমার চা কই, আমি গরম চা খাবো না? যেন আগের জন্মে উনি নবাব খাণ্জা খাঁ ছিলেন, একশোটা দাস দাসী রেডি হয়ে থাকতো ওনার সেবার জন্য। অত যদি ইচ্ছে হয় বাপু, তাহলে তাদের জোগাড় করে নিয়ে আসো তো দেখি? সে মুরোদ তো নেই, তখন বলবে আমি সরকারি চাকরি করি, কয়টা টাকা আর মাইনে পাই!

এক নিঃশ্বাসে এতো গুলো কথা বলে এবার গিন্নী একটু থামলো।

আমিও বাকি সাড়ে নয় জন আম আদমীর মত ততক্ষণে চুপ হয়ে গিয়ে অন্য কাজে মন দিয়েছি। আমাদের environment এর পেপারে লেখা ছিল, সুনামি হলে মাথার পেছনে দুটো হাত রেখে নিচু হয়ে বসে থাকতে হয়, ঝড় নাকি ওপর দিয়ে চলে যায়! এই চেষ্টাটা মোটামুটি ভাবে সফল হয়ে যায় আমার রোজকার জীবনে। এই সময়ে আমার একটাই কাজ, মোবাইলে একটা গান চালিয়ে দেওয়া – একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে। Spotify তে নচিদার এই গানটা আমার ফেভারিট লিস্টে পিন পোস্ট করা আছে, যখনই দরকার পড়ে চালিয়ে দি!

ফল? একটু পরেই এই রকম গরম গরম দু কাপ চা কিংবা কফি। সাথে কিছু “টা” ও জুটে যেতে পারে কপাল খুব ভালো থাকলে।

কি ভাবছেন? বাড়িতে যুদ্ধ লাগলে আপনিও ঠিক এইরকমই করবেন? তাহলে দাদা আপনাকেও তো একবার environmental science এর পেপারটা পরে ফেলতে হয় খুব তাড়াতাড়ি। সব বিদ্যে তো আর শুনে শুনে ট্রান্সফার হয় না!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.