ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন, হঠাৎ রবিবারের আনন্দবাজারে একটা বিজ্ঞাপন দেখলাম:
“ভারত – বাংলাদেশ মৈত্রী মজবুতে যৌথ উদ্যোগে এক কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। ইচ্ছুক লেখক – লেখিকারা সত্ত্বর মৌলিক লেখা পাঠান। মনোনীত কবিতাগুলি গঙ্গা – পদ্মা ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যায় ছাপা হবে।”
ততদিনে অপটু হাতে কিছু কবিতা লেখা হয়ে গেছে, কিছু ছন্দ মিলিয়ে আর কিছু গদ্যের আঙ্গিকে। তার থেকেই ভারতবর্ষের ওপর একটা প্রিয় কবিতা বেছে পাঠিয়ে দিলাম খামের ওপর পোস্ট বক্স লিখে। দেখতে দেখতে এক মাস কেটে গেছে, ভুলতে বসেছি সবকিছু। তখনই একদিন চিঠি আসে:
মাননীয় লেখক,
আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে আপনার কবিতাটি মনোনীত হয়েছে এবং সেটি গঙ্গা – পদ্মা ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত হবে। এই উপলক্ষে আগামী…… তারিখে দুপুর দুই ঘটিকায় কলেজ স্ট্রিটের নিম্নলিখিত ঠিকানায় প্রথম প্রকাশের এক অনারম্বর অনুষ্ঠানে আপনাকে সাদর আমন্ত্রণ জানাই। আপনার হাতে প্রথম সংখ্যা তুলে দিতে পারলে আমরা গর্বিত হবো।
ইতি
একে তো প্রথম ছাপার আনন্দ আর সাথে উপরি পাওনা ক্লাস সেভেনের ছেলেকে আপনি বলে সম্বোধন করা। আমি তখন হাওয়ায় ভাসছি। আসেপাশে যারা ছিল তারা জেনে গেলো নতুন লেখকের জন্ম হয়েছে, কেউ কেউ ভবিষ্যতের কবিও বলে ফেললো (হায়!)। যাই হোক, দিন গোনা শুরু করে দিলাম।
সেই প্রথম বাবার মুখে শুনলাম একটা প্রবাদ – Man Proposes, God Disposes. ক’দিন পরেই অনুষ্ঠানের দিনেই স্কুলের পরীক্ষা পড়েছে, সুতরাং আর যাওয়া হলো না। নিজের লেখা সাদা কালো ছাপার হরফে প্রথম দেখার সুযোগ আরো একটু পিছিয়ে গেলো। ম্যাগাজিনটাও বাড়িতে এসে পৌঁছয় নি আর।