বসন্ত এসে গেছে!

অনেকক্ষণ ধরেই কলিংবেলটা বেজে যাচ্ছিল। ডেস্কে বসে আছি, সামনে খোলা ম্যাকবুক; মিটিং চলছে অফিসের। আজ শুক্রবার, ওয়ার্ক ফ্রম হোম করা যায় আমাদের অফিসে। ম্যানেজমেন্ট বলে দিয়েছে, কাজটা করে দিয়ে বিকেলে পাবে গিয়ে দু’ গ্লাস বিয়ার খেয়ে নিও। বিলটা পাঠিয়ে দিলে reimbursement হয়ে যাবে। কিন্তু ক্লায়েন্টের থেকে যেন কোনো কমপ্লেন না আসে। ওটা এলো কিন্তু আমি সব টাকা স্যালারি থেকে কেটে নেবো।

দু’বার ডাকলাম গিন্নিকে, শুনতে পেলো না। সম্ভবত app এ গান গাইছে। এই এক জ্বালা হয়েছে, সকালে শুনছি yeh shaam mastani.. আবার বিকেলে গাইছে subho se jab hum nind se jage.. গান গেয়ে নাকি পয়সা হয়, এরপর এদের competition হবে সামনের মাসে। দিল্লী গিয়ে গান করতে হবে, বোঝাতে পারছি না যে এটা ওদের পয়সা তোলার ফন্দি। তোমার আমার ট্যালেন্ট সব নর্দমার জলে!

কে যে এলো, এই দুপুরে! সকালে সবজি দিয়ে গেছে দোরগোড়ায়, বেলায় তরমুজ, আর একটু আগেই ওষুধ। বিকেলে শুনলাম ঘর পরিষ্কার করার ঝাঁটা আসবে আর রাতে মালাবার পরোটা। এর মাঝে কে যে এলো কে জানে! যাই হোক, আমার ওঠার আগেই গিন্নি উঠে গেলো।

স্টাডি রুম থেকেই দেখতে পেলাম, আগে আগে বউ আসছে, পেছনে আমাদের complex এর sweeper!

বউ এর হুঙ্কারে টনক নড়লো, শুনতে পেলাম আমাকে উদ্দেশ্য করেই বলছে, অনেকদিন বলেছি তিনটে বাথরুম পরিষ্কার করতে। আজ করছি, কাল করবো, বলে তোমার দিন তো আর আসেই না। এবার আমি দেখাচ্ছি মজা।

গলার সপ্তম সুর পারলে নবমে চলে যায় অনায়াসে! কি অসামান্য ক্ষমতা! কেন যে এরা শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেয় না!

“শোনো, ওই ঘরের মধ্যেই থেকো, একদম এদিকে আসার চেষ্টা করবে না। আগে ও কাজ গুছিয়ে নিক, সব বাথরুম পরিষ্কার করে দিক। তারপর মাটিতে পা দিও মহারাজ।”

হটাৎ আমার বেয়াড়া ফোনটা কোনো কারণ ছাড়া বেজে উঠলো – বসন্ত এসে গেছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.